শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিরোজপুর শিক্ষককে হাতুড়িপেটা, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন নেছারাবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোহার পুল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মঠবাড়িয়ায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ, স্বামী ও শ্বশুর আটক পিরোজপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা কাউখালীতে মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান নেছারাবাদে ২৬ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা পিরোজপুরে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ভান্ডারিয়ায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নদীতে জাল ফেলছে জেলেরা! মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ পিরোজপুর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর কমিটি গঠন: সোহাগ সভাপতি, মিঠু সম্পাদক কাউখালীতে অপহরণের তিন মাস পর সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উদ্ধার কাউখালীতে জেলের মরদেহ উদ্ধার ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীর প্রথম ক্লাস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা ভাণ্ডারিয়ার চাঞ্চল্যকর আসমা হত্যার বিচার দাবিতে পিরোজপুরে মানববন্ধন কাউখালীতে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত মঠবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেফতার
কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে রক্ষা পাবে কোটি টাকার সবজি: কৃষি খাতে বিপ্লবের সম্ভাবনা

কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে রক্ষা পাবে কোটি টাকার সবজি: কৃষি খাতে বিপ্লবের সম্ভাবনা

নাজিরপুর প্রতিনিধিঃ

উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বিলাঞ্চলের বেশিরভাগ জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় বছরের অর্ধেক সময়  ডুবে থাকে পানির নিচে। প্রত্যন্ত এলাকা দেউলবাড়ী দোবড়া, কলার দোয়ানিয়া ও মালিখালী ইউনিয়নের অধিকাংশই বিল। এখানকার বাসিন্দারা বছরের প্রায় ৬ মাস পানিবন্দি থাকে। এক মৌসুমের ফসলে তাদের অভাব-অনটনের মধ্যে থাকতে হয়। তবে তাদের বিকল্প আয়ের পথ খুলে দিয়েছে ভাসমান সবজি চাষ। দুইশ’ বছরেরও আগে থেকে চলে আসা এ বিরল কৃষি পদ্ধতি আজ দেশ ছাড়িয়ে বিশ্ব স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এ অঞ্চলে প্রতিবছর প্রচুর সবজি উৎপাদন হলেও সংরক্ষণের অভাবে এর বড় একটা অংশ নষ্ট হয়ে যায়। বাজারমূল্য না পেয়ে কৃষকরা যেমন লোকসানে পড়ে, তেমনি দেশে খাবারের অপচয়ও বেড়ে যায়। এই সমস্যা সমাধানে সরকার বা বেসরকারি পর্যায়ে কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। সঠিকভাবে কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন হলে কৃষকদের উৎপাদিত কোটি টাকার সবজি নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাবে, এতে করে মৌসুমি সবজি সংরক্ষণ করে সারা বছর বাজারজাত করা যাবে, কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবে এবং ভোক্তারাও সঠিক দামে পণ্য পাবে।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, এ অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এটা উৎকণ্ঠ ও দুর্ভোগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বছরের একবারই তারা জমিতে ফসল ফলাতে পারছেন। বাকি সময় কোমর পানি থাকায় জমি থাকে অনাবাদি। বদ্ধ পানিতে জন্ম নেয় কচুরিপানা ও আগাছা। এছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মরার উপার খাড়াঁর ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে প্রায় ১৫০ বছর ধরে বিকল্প পদ্ধতিতে পানির উপর কচুরি পানার বেড ( স্থানীয় নাম ধাপ) তৈরি করে চাষাবাদ করে আসছেন কৃষকরা। এর একেকটি ভাসমান ধাপ ৫০-৬০ মিটার লম্বা ও দেড় মিটার চওড়া হয়। এই বিল এলাকা কচুরিপনা, দুলালী বন, শ্যাওলা ও ফ্যানা ঘাসসহ অনেক জলজ উদ্ভিদে ঠাসা থাকত। এসব জলজ উদ্ভিদকেই কাজে লাগালেন এখানকার কৃষকরা। বের করলেন এই নতুন চাষাবাদ পদ্ধতি। আর জলজ সেই স্তূপগুলোকে পচিয়ে তৈরি করা হল এমন এক ধাপ যা চাষাবাদের উপযোগী ও পানিতে ভেসে থাকে।
এ ধাপ পদ্ধতি চাষের উপযোগী করতে ৭ থেকে ১০ দিন রাখতে হয়। ভাসমান বা ধাপ পদ্ধতিতে সরাসরি বীজ বপন সম্ভব নয় । কৃষকেরা প্রতিটি বীজের জন্য এক ধরনের পদ্ধতি গ্রহণ করে। যার স্থানীয় নাম দেওয়া হয়েছে ‘দৌলা’।
নাজিরপুরের দেউলবাড়ী, গাওখালী,বিল ডুমরিয়া, পদ্মডুবী, মনোহরপুর, বৈঠাকাটা মুগারঝোরসহ বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা ২০১৫ সালে ভাসমান পদ্ধতির সবজি চাষকে বিশ্ব ঐতিহ্যভুক্ত করে গ্লোবাল ইনটেষ্ট এগ্রিকালচার হেরিটেজ সিস্টেম বলে অভিহিত করেন। তবে চাষাবাদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা এখন আর আগের মত লাভ করতে পারছেন না। এমনকি মিলছে না সম্ভাবনা ময় এ কৃষির ক্ষেত্রে কাঙ্খিত সফলতা। ফলে অনেকটাই হতাশ স্থানীয় চাষীরা।

নাজিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ পেশার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে অন্তত ৫ থেকে ৬ হাজার কৃষক জড়িত। বিল ডুমুরিয়ার কৃষক জামাল হোসেন জানান, ব্যাপক সম্ভাবনাময় একৃষিশিল্প রক্ষায় সরকারি প্রণোদনার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সুদ বিহীন ঋণ সুবিধা দিলে কৃষকরা ভাসমান বেড়ে সবজি চাষে বিপ্লব সৃষ্টি করতে পারবেন। যা দিয়ে দেশের সবজির চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম অপ্রতুলতায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এর অঞ্চলে সরকারিভাবে একটি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করলে পচনের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে কোটি টাকা সবজি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসরাতুন্নেসা এশা জানান, ভাসমান বেড়ে সবজি উৎপাদন প্রকল্প যা গত তিন বছর আগে শেষ হয়ে গিয়েছে। সুতরাং এই মুহূর্তে আমরা ভাসমান বেড়ে সবজি উৎপাদনকারী কৃষকদের জন্য তেমন কোন সহযোগিতা করতে পারছি না। তবে আমরা আশাবাদী আমাদের বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ কয়েকটি উপজেলা যেমন নাজিরপুর, নেছারাবাদ, বানরিপাড়া, গোপালগঞ্জের কয়েকটি উপজেলা নিয়ে ভাসমান বেডে সবজি উৎপাদন প্রকল্প নতুনভাবে শুরু হবে। প্রকল্প শুরু হলে আমরা ইনশাআল্লাহ এ সকল চাষীদের সহযোগিতা করতে পারব।

 

 

 

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana